আম্মার ইবনে ইয়াসিরের মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী | খন্দকের (আহজাবের) যুদ্ধ-২, পরিখা খননের সময়ের অলৌকিক ঘটনাগুলোর মধ্যে পাথর ভাঙা নিয়ে একটি ঘটনাও বর্ণিত আছে। একবার একটি বড় পাথর খননের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নবিজি (সা) যেখান দিয়ে দাগ কেটে দিয়েছিলেন পাথরটি ঠিক সেই বরাবরই ছিল।
সাহাবিরা প্রথমে পাথরটি ভেঙে দাগ বরাবর খননকাজ চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি ভাঙা বা সরানো সম্ভব হচ্ছিল না। তখন কেউ একজন বলেন, “চলো, আমরা পাথরটা একটু পাশ কাটিয়ে পরিখা খনন করি।” উত্তরে এক সাহাবি বলেন, “না, নবিজিকে (সা) জিজ্ঞেস না করে তা করা ঠিক হবে না, যেহেতু তিনি নিজে দাগ দিয়ে দিয়েছেন।”
আম্মার ইবনে ইয়াসিরের মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী | খন্দকের (আহজাবের) যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

এখানে নবিজির (সা) প্রতি সাহাবিদের আনুগত্যের গভীরতা লক্ষ করুন। সাহাবিরা বিষয়টি নবিজিকে (সা) জানালে তিনি বললেন, “কুড়ালটি আমাকে দাও।” তারপর তিনি পরিখার ভেতরে গিয়ে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে কুড়াল দিয়ে পাথরটিতে আঘাত করলেন। প্রথম আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে পাথরটির এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে গেল।
এরপর তিনি বললেন, “আল্লাহু আকবার! আমি এইমাত্র দেখতে পেলাম, আল্লাহ আমাকে আল-শামের চাবি দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি এখন আল-শামের লাল দুর্গগুলো দেখতে পাচ্ছি।” [উল্লেখ্য, নবিজির (সা) মৃত্যুর পরে মুসলিমরা প্রথম যে রাজ্যটি জয় করেছিলেন তা হলো আল- শাম, যা আবু বকরের (রা) খেলাফতের সময়ে শুরু হয়ে উমরের (রা) খেলাফতের সময়ে শেষ হয়েছিল।] নবিজি (সা) আবারও পাথরটিতে আঘাত করলে সেটির দুই-তৃতীয়াংশ ভেঙে পড়ল।

এবার তিনি বললেন, “আল্লাহু আকবার! আমাকে পারস্যের চাবি দেওয়া হয়েছে। আমি এখন আল-মাদাইনের (পারস্য সাম্রাজ্যের রাজধানী) সাদা স্ত গুগুলো দেখতে পাচ্ছি।” [ প্রকৃতপক্ষে, আল-শামের পরে মুসলিমরা দ্বিতীয় যে দেশটি জয় করেছিলেন তা হলো পারস্য ।। তৃতীয় আঘাতে নবিজি (সা) পুরো পাথরটি ভেঙে ফেলেন। এবার তিনি বলেন, “আল্লাহু আকবার! আমাকে ইয়েমেনের চাবি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম, আমি এখন সানার দরজাগুলো দেখতে পাচ্ছি।” [আমরা জানি, মুসলিমরা ইয়েমেনও জয় করেছিলেন ।।
আম্মার ইবনে ইয়াসিরের মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী

পরিখা খননের সময় নবিজি (সা) দেখলেন, আম্মার প্রবল উৎসাহের সঙ্গে অন্যদের দ্বিগুণ কাজ করছেন। তিনি তাঁকে বললেন, “আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করুন, আম্মার। ভবিষ্যতে সীমা অতিক্রমকারীদের দল (‘আল-ফিয়াত আল- বাগিয়াহ) তোমাকে হত্যা করবে।” হাদিসটি ৩৭ হিজরিতে আলি ইবনে আবি তালিবের খেলাফতের আমলে মুয়াবিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় সত্য হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ
