ওহুদের একমাত্র যুদ্ধবন্দি: আৰু আচ্ছা আল-জুমাহি | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

ওহুদের একমাত্র যুদ্ধবন্দি: আৰু আচ্ছা আল-জুমাহি | ওহুদের যুদ্ধ-৫, যুদ্ধে অংশ নেওয়া ৩,০০০ মুশরিকের মধ্যে মুসলিমরা মাত্র একজনকে বন্দি করতে পেরেছিলেন। তার নাম ছিল আবু আড্ডা আল-জুমাহি। কৃতকর্মের শাস্তিস্বরূপ যুদ্ধের ময়দানেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আবু আচ্ছা এর আগেও বদরের যুদ্ধে কুরাইশদের পক্ষে লড়তে গিয়ে মুসলিম বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিল। তখন তার মুক্তিপণ ধার্য করা হয়েছিল ৪,০০০ দিরহাম।

 

ওহুদের একমাত্র যুদ্ধবন্দি: আৰু আচ্ছা আল-জুমাহি | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সে নবিজির (সা) কাছে মিনতি করে বলেছিল, “হে মুহাম্মদ, আমার কোনো পুত্র সন্তান নেই, শুধু কয়েকজন কন্যা সন্তান আছে (অর্থাৎ আমি যদি এখন মারা যাই, তবে আমার কন্যাদের দেখভাল করার আর কেউ থাকবে না)। তাই আমি করজোড়ে মিনতি করছি, আমার ওপর সদয় হোন এবং আমাকে যেতে দিন।”

ওহুদের একমাত্র যুদ্ধবন্দি: আৰু আচ্ছা আল-জুমাহি | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

bn.islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আবু আড্ডার আকুতিতে নবিজির (সা) মন কিছুটা নরম হয়। তিনি তাকে বলেন, “আমি তোমাকে ছেড়ে দিতে পারি, কিন্তু তোমাকে যেন আর কখনও আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে না দেখি।” তারপর তিনি তাকে কোনো মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেন।

আবু আড্ডা ছিল মক্কার অন্যতম প্রধান কবি। ওহুদের যুদ্ধের আগে আবু সুফিয়ান তার কাছে গিয়ে কুরাইশদের মনোবল বাড়ানোর জন্য একটি কবিতা লিখতে বলে। আৰু আচ্ছা তাকে বলে, “আমি এটা করতে পারব না, কারণ আমি মুহম্মদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তোমাদের সাহায্য করব না।” তারপরও আবু সুফিয়ান তাকে রাজি করানোর চেষ্টা করে বলে, “কিচ্ছু হবে না। আমরা ৩,০০০ জনের এক শক্তিশালী বাহিনী। আমরা কোনোভাবেই হারব না। আমরা জেতার পর তুমি যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ভাগ পাবে। আর যদি তুমি মারা যাও তাহলে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তোমার কন্যাদের আমি নিজের কন্যার মতো করে দেখভাল করব।”

 

ওহুদের একমাত্র যুদ্ধবন্দি: আৰু আচ্ছা আল-জুমাহি | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আবু সুফিয়ানের কথায় আবু আজ্জার মনে সম্পদের লোভ জেগে উঠে। সে নবিজিকে (সা) দেওয়া তার প্রতিশ্রুতি ভেঙে কবিতা লিখে ফেলে। শুধু তা-ই নয়, সে সশরীরে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ওহুদের যুদ্ধে অংশ নেয়। আল্লাহ পবিত্র কোরানে এ প্রসঙ্গে বলেছেন: “যদি কোনো সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তোমার এ আশঙ্কা হয়, তারা (চুক্তিভঙ্গ করে) বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাহলে তুমিও (তাদের সাথে সম্পাদিত) চুক্তি একইভাবে ছুড়ে ফেলে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসভঙ্গকারীদের ভালোবাসেন না।” [সুরা আনফাল, ৮:৫৮] আমাদের ধর্মে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের (“খিয়ানা”) কোনো সুযোগ নেই। কেউ আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে তার বদলে আপনি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন না। অন্য কোনো বিষয়ে সমপরিমাণ প্রতিশোধের সুযোগ থাকলেও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তা প্রযোজ্য নয় ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment