উকবা ইবনে আবু মুআয়েত: অংশ নেবে কি নেবে না | বদরের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

উকবা ইবনে আবু মুআয়েত: অংশ নেবে কি নেবে না | বদরের যুদ্ধ-২, উতবা ইবনে রাবিয়া এবং আবু লাহাবের যুদ্ধে যেতে না চাওয়ার কারণগুলোতে জাহেলি মানদণ্ডে এক ধরনের যৌক্তিকতা ছিল। কিন্তু উকবা ইবনে আবু মুআতের যুদ্ধে না যাওয়ার কারণ ছিল শুধুই কাপুরুষতা।

 

উকবা ইবনে আবু মুআয়েত: অংশ নেবে কি নেবে না | বদরের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

উকবা ইবনে আবু মুআয়েত: অংশ নেবে কি নেবে না | বদরের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মক্কায় ইসলামের বিরোধিতাকারীদের বিরোধিতারও ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা ছিল। পৌত্তলিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের কারও কারও মধ্যে শিষ্টাচার ও ভালোমানুষির উপাদান নিহিত ছিল; তারা মর্যাদাহানিকর কিছু করত না। এর সর্বোত্তম উদাহরণ আবু সুফিয়ান, যার মধ্যে জাহেলি স্বভাবের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকলেও ভালোমানুষিও নিহিত ছিল; সে কখনও অমর্যাদাকর কিংবা অশ্লীল কিছু করেনি। । সাধারণভাবে বলতে গেলে, নবি করিমের (সা) শত্রুদের মধ্যে যারা আচার- আচরণে ভালো ছিল, আল্লাহ তাদের কোনো না কোনোভাবে সঠিক পথ প্রদর্শন  করেছিলেন; কিন্তু শিষ্টাচারবর্জিতরা সৎপথে পরিচালিত হয়নি। তবে অবশ্যই এর ব্যতিক্রম রয়েছে। উকবা ছিল নিকৃষ্টদের মধ্যে সবচেয়ে নীচ, অশ্লীলদের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য। সম্ভবত এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা কোরানে তার কথা উল্লেখ করেননি।

উকবা ছিল সেই ব্যক্তি যে নৰিজি (সা) যখন কাবার সামনে নামাজ পড়ছিলেন তখন তাঁকে পেছন থেকে কাপড় পেঁচিয়ে ধরে তাঁর দম বন্ধ করে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল। আবু জেহেল বলেছিল ‘তোমাদের মধ্যে কে আছ যে উটের নাড়িভুঁড়ি এনে মুহাম্মদ যখন তার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে থাকবে তখন তাঁর পিঠের ওপর ফেলতে পারবে?’ উকবা হলো সেই ব্যক্তি যে তখন এই জঘন্যতম কাজটি করেছিল। আমরা ১৫তম পর্বে এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। উকবা ছিল সেই গোপন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের একজন যারা নবিজিকে (সা) হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।

 

bn.islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বর্ণিত আছে, উকবা একবার মজা করার জন্য নবিজিকে (সা) আহারের জন্য নিমন্ত্রণ করেছিল। নবিজি (সা) তাকে সাফ বলে দিয়েছিলেন, “যতক্ষণ না তুমি সাক্ষ্য দিচ্ছ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’, ততক্ষণ আমি তোমার সঙ্গে বসে খাব না।” একথা শুনে সে ক্রোধে নবিজির (সা) মুখে থুথু ছিটিয়ে দেয় । নবিজি (সা) শান্তভাবে সেই থুথু মুছে ফেলেন এবং ভবিষ্যদ্বাণীর মতো করে বলেন, “হে উকবা, ভবিষ্যতে যখন আমি মক্কার বাইরে তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করব, তখন তোমাকে হত্যা করব।”

 

উকবা ইবনে আবু মুআয়েত: অংশ নেবে কি নেবে না | বদরের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

বদরের যুদ্ধে যোগদানের কথা শুনে উকবার এই ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে সে কুরাইশ নেতাদের জানিয়ে দেয়, “এই লোক আমাকে (মক্কার বাইরে) হত্যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাই আমি এখন মক্কা থেকে বাইরে যেতে পারব না।” উকবা সম্ভবত অন্তরের গভীরে বুঝতে পেরেছিল যে, ভবিষ্যদ্বাণীটি সত্যি হতে চলেছে। সে কারণেই সে মক্কা ছেড়ে যেতে চায়নি। তার পরিবারের একজন ঠাট্টা করে বলেছিল, “চিন্তা কোরো না, আমার কাছে একটি দ্রুতগামী উট আছে, যা وا আমি তোমাকে দেব। সুতরাং যা-ই হোক না কেন, তোমার উট ঠিকই তোমাকে নিরাপদে মক্কায় ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।” অন্যরাও তাকে নিয়ে অনবরত তিরস্কার ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছিল। একপর্যায়ে সে তার পুরুষত্ব প্রমাণ করার জন্য কুরাইশ বাহিনীর সঙ্গে অভিযানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment