সিরাহর মদিনাপর্বের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা | সুফ্ফার লোকেরা, সিরাহর মক্কাপর্ব ছিল ১৩ বছর আর মদিনাপর্ব ছিল ১০ বছর। মদিনার সময়কে তিনটি পৃথক ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে:
Table of Contents
সিরাহর মদিনাপর্বের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা | সুফ্ফার লোকেরা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

১) একীকরণের যুগ:
হিজরতের শুরু থেকে আহজাবের যুদ্ধ (৫ম হিজরি) পর্যন্ত। এই সময়ে মুনাফেক ও ইহুদিদের নানা রকমের বিরুদ্ধতা দমন করা হয়। মদিনায় শুরুর দিকে পৌত্তলিকতা ছিল, পরে ধীরে ধীরে কমে আসে। সত্যি বলতে, মদিনার পৌত্তলিক, মুনাফেক, ইহুদি প্রভৃতি অভ্যন্তরীণ শক্তির বিরুদ্ধতা অনেকটা কমানো সম্ভব হলেও সম্পূর্ণভাবে দূর করা যায়নি। যুগে মদিনায় মুসলিমদের একদিকে উল্লিখিত অভ্যন্তরীণ শত্রুদের মোকাবিলা করতে হয়েছে, অন্যদিকে মদিনার বাইরের শত্রু কুরাইশদেরও মোকাবিলা করতে হয়েছে।
তাই প্রথম যুগটি ছিল ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় বড় বাধা অপসারণ করার যুগ। নবিজি (সা) বদরের যুদ্ধের সময় আল্লাহ তায়ালাকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “এই দলটি ধ্বংস হয়ে গেলে পৃথিবীতে আপনার উপাসনা করার আর কেউ থাকবে না।” অর্থাৎ উম্মাহর অস্তি তুই ঝুঁকির মুখে পড়বে। ওহুদ ও আহজাবের (খন্দকের যুদ্ধও ছিল একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। তবে আহজাবের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অবস্থা পাল্টে যেতে শুরু করে।

২) যুদ্ধবিরতির যুগঃ
হিজরতের ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম বছর: হুদায়বিয়ার সন্ধি থেকে শুরু করে মক্কাবিজয় পর্যন্ত মোট আড়াই বছর। এই সময়ে মুসলিমরা অমুসলিমদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে। সহাবস্থান করে। নবিজি (সা) আশেপাশের বিভিন্ন ভূখণ্ডের প্রধানদের কাছে চিঠি ও দূত পাঠান। এই সময়ে মুসলিম প্রজাতন্ত্রের আয়তন পাঁচগুণ সম্প্রসারিত হয়েছিল, যা ছিল যুদ্ধকালীন আয়তনের চেয়ে অনেক বেশি।

৩) প্রতিষ্ঠার যুগ।
মক্কাবিজয়ের পর থেকে একাদশ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে নবিজির (সা) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। এই সময়েই আল্লাহ তায়ালা সুরা নাসরের আয়াতটি অবতীর্ণ করেন: ‘এটিই চূড়ান্ত বিজয়’। অর্থাৎ ততদিনে সমগ্র আরব উপদ্বীপ ইসলামের ছায়াতলে চলে আসে আনুষঙ্গিক দ্রষ্টব্য: আমরা নবিজির (সা) জীবনের প্রথম ৫৩ বছর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই সময়টা তিনি মক্কায় কাটিয়েছেন। কিন্তু তাঁর জীবনীগ্রন্থের বা সিরাহের মদিনাপর্ব মক্কার পর্বের চেয়ে তিনগুণ বড়; কারণ আমাদের কাছে তিনগুণ তথ্য রয়েছে।
আরও পড়ূনঃ
