উকবা ইবনে আবি মুআয়েতের শেষ পরিণতি | বদরের যুদ্ধ-৬, উকবা ইবনে আবি মুআয়েতই ছিল সেই ব্যক্তি যে আবু জেহেলের কথায় উটের নাড়িভুঁড়ি এনে নবি করিমের (সা) পিঠের উপর ফেলেছিল। ইবনে ইসহাক তাকে ‘কুরাইশদের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য ব্যক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ভাবতে পারেন, এমন একজন ধনী ও অভিজাত ব্যক্তি নিজের পোশাক নষ্ট করে দুর্গন্ধযুক্ত নাড়িভুঁড়ি নিজে বহন করে এনেছিল, নবিজির (সা) প্রতি তার ছিল এতটাই ঘৃণা।

উকবা ইবনে আবি মুআয়েতের শেষ পরিণতি | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
এই উতবাই আরেকদিন নবিজিকে (সা) কাবায় নামাজ পড়ার সময় শ্বাসরোধে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। সেই সময় আবু বকর (রা) খবর পেয়ে দৌড়ে কাবায় এসে নবিজিকে (সা) রক্ষা করেন। ১৫তম পর্বে আমরা এই দুটি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। উকবাকে মৃত্যুদণ্ডের জন্য বাইরে আনা হলে সে জিজ্ঞেস করে, “সবার মধ্য থেকে শুধু আমাকেই কেন?” তখন আলি (রা) তাকে বলেন, “আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি তোমার মাত্রাতিরিক্ত শত্রুতা করার কারণে।”

ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেছেন, উকবাকে হত্যার উদ্যোগ নেওয়ার সময় সে প্রাণভিক্ষা চেয়ে বলেছিল, “হে মুহাম্মদ, আমার সন্তানদের দেখাশোনা কে করবে?” নবিজি (সা) এই কথায় হেয়ালিপূর্ণভাবে উত্তর দিয়েছিলেন, “আগুন।” এর পরপরই আলি উকবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন। নবি করিম (সা) ‘আগুন’ শব্দটি দিয়ে আসলে কী বুঝিয়েছিলেন? এ বিষয়ে দুটি ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে:
১. নিজের সন্তানদের নিয়ে তোমার এখন চিন্তা করার দরকার নেই। তুমি বরং (দোজখের) আগুন নিয়ে চিন্তা করো।
২. যদি তোমার সন্তানরা তোমাকে অনুসরণ করে, তাহলে তারাও তোমার সঙ্গে দোজখের আগুনেই যোগ দেবে।

আমাদের ধর্ম বলে, যখন কঠোরতা প্রয়োজন তখন কঠোরতা দেখাও, আর যখন দয়া প্রয়োজন তখন দয়া দেখাও। আমাদের বোঝা প্রয়োজন, সব কাফেরই এক নয় । এই দুজন ছিল শয়তানের শিরোমণি। কদর্যতার নিরিখে এই দুজন ছিল কুরাইশদের অন্য নেতৃস্থানীয় (উমাইয়া, আবু জেহেল প্রমুখ) যারা বদরের যুদ্ধে মারা গিয়েছিল তাদের সমপর্যায়ের। সুতরাং তাদের জন্য কোনো ছাড় বা ক্ষমা। নেই। আল্লাহ তায়ালা সম্ভবত এই দুজনকে অসম্মানজনক মৃত্যু দেবেন বলেই যুদ্ধের সময় তারা বেঁচে গিয়েছিল; আল্লাহই তা ভালো জানেন।
আরও পড়ুনঃ
