মানবজাতির জন্য নবির প্রয়োজন কেন? | দ্বিতীয়বারের ওহি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মানবজাতির জন্য নবির প্রয়োজন কেন? | দ্বিতীয়বারের ওহি, পৃথিবীতে নবিদের আগমনের উদ্দেশ্য কী? আমাদের কেনই বা তাঁদেরকে প্রয়োজন? এই বিষয়টিই ইব্রাহিমের (আ) ধর্মের অনুসারীদের সঙ্গে বাকি মানবজাতির পার্থক্য তৈরি করে। আমরা (ইব্রাহিমের অনুসারীরা) বিশ্বাস করি, মানবজীবনের জন্য চূড়ান্ত ‘হিদায়া’ বা দিকনির্দেশনা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে নবি-রসুলগণের মাধ্যমেই আসে। অনেক মানুষই বিশ্বাস করে, জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় রীতিনীতি ও দিকনির্দেশনা তারা নিজেরাই পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে খুঁজে পেতে পারে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত বিধানই সর্বোত্তম বিধান। চূড়ান্ত বিধান দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহরই রয়েছে।

 

 

মানবজাতির জন্য নবির প্রয়োজন কেন? | দ্বিতীয়বারের ওহি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মানবজাতির জন্য নবির প্রয়োজন কেন? | দ্বিতীয়বারের ওহি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আমাদের জন্য সর্বোত্তম ও সর্বাপেক্ষা উপযোগী কী হবে তা আল্লাহ তায়ালাই সবচেয়ে ভালো জানেন; এ কারণেই তিনি মানবজাতির কাছে একের পর এক নবি পাঠিয়েছেন। এই সত্য অস্বীকার করা আল্লাহর করুণা ও শক্তি অস্বীকার করারই শামিল। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা বলে, ‘হ্যাঁ, আল্লাহ্ আমাদের সৃষ্টি করেছেন; কিন্তু তখন তিনি আমাদের নিজেদের মতো করে থাকতে দিয়েছেন, এবং এখন আমাদের জন্য তাঁর আর কিছুই করার নেই।’ আসলে এমন কথা বলা আল্লাহ আজ্জা ওয়াজালকে অপমান করার শামিল। পবিত্র কোরানে আছে, “আর তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা উপলব্ধি করেনি যখন তারা বলে, “আল্লাহ মানুষের কাছে কিছুই নাজিল করেননি।”

[সুরা আনআম, ৬:৯১] তিনি (আল্লাহ) কিছুই প্রেরণ করেননি, একথা বলার মধ্য দিয়ে তারা আল্লাহকে অপমান করে। আমরা বলি, আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের ভালোবাসেন। তাই তিনি শুরু থেকে শেষ অবধি আমাদের কাছে নবি পাঠিয়েছেন। নবিদের পাঠানো আমাদের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসারই নিদর্শন। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সত্য জ্ঞান মানুষের মধ্যে টিকিয়ে রাখার জন্যও নবিদের প্রয়োজন।

 

bn.islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আল্লাহ নবি না পাঠালে আমরা কীভাবে জানব কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায়, কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ, কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক? আমাদের চারপাশে ভালো করে দেখুন। প্রত্যেক সমাজ ও জাতির ভিন্ন ভিন্ন রীতিনীতি। কোনো দুটি দেশের, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দুটি রাজ্যের, আইনও এক নয়। একটি বিষয় এক দেশে আইনসম্মত হলেও অন্য দেশে তা না- ও হতে পারে। আইনকানুনের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট মানদণ্ড না থাকার ফলে এমন। হয়। অতএব মানবজাতির জন্য আল্লাহর প্রেরিত নবি থাকা দরকার। শুরুর দিকের ইসলাম গ্রহণকারীরা নবুয়তের শুরুর দিকে যখন সুরা মুদাসসিরে রসুলকে (সা) বলা হয় ওঠা এবং সতর্ক করো’, তখন তিনি শুধু তাঁর নিকটাত্মীয়, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের মধ্যে আল্লাহর বাণী প্রচার করেছিলেন।

 

মানবজাতির জন্য নবির প্রয়োজন কেন? | দ্বিতীয়বারের ওহি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন খাদিজা বিনতে খুওয়ালিদ (রা)। তিনি এই নতুন ধর্মমতের বিষয়ে প্রায় কিছু না জেনেই তা নিশ্চিন্তচিত্তে গ্রহণ করেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায়, স্বামীর প্রতি তাঁর কতটা বিশ্বাস ও আস্থা ছিল। তিনি বলেছিলেন, “আল্লাহর কসম! আল্লাহ্ আপনাকে কখনও অবমাননা করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুঃস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।”

দ্বিতীয় ধর্মান্তরিত ব্যক্তিটি ছিলেন ওয়ারাকা ইবনে নওফেল। তিনি শাহাদা না পড়েও ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, কারণ সেই সময় শাহাদার বিষয়টি ছিল না। অবশ্য তিনি শাহাদা না পড়লেও বলেছিলেন, “আপনি একজন নবি।” এই কথা বলার মধ্য দিয়ে তিনি নতুন ধর্মটি গ্রহণ করেছিলেন বলে ধরে নেওয়া যায়। তিনি কোনো ইবাদত না করেই মারা গেছেন। তবে তিনি কথায় ও আচরণে আন্তরিক ছিলেন এবং নবি করিমের (সা) নবুয়তকে স্বীকার করেছেন। অতএব নবিজি (সা) তাঁকে জান্নাতে নিজ উম্মতের অংশ হিসেবে দেখতে পেয়েছিলেন।

তৃতীয় ধর্মান্তরিত ব্যক্তির ব্যাপারে তিনজনের নাম উল্লেখ করতে হয়: আলি ইবনে আবি তালিব, আবু বকর এবং জায়েদ ইবনে হারিসা। এই তিনজনের মধ্যে প্রথম কে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তা নিয়ে ইতিহাসবিদ স্কলারদের মধ্যে মতবিরোধ আছে, যা আমরা আগের পর্বে উল্লেখ করেছি।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment