কতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল? | বনু কুরায়জা উপজাতি, কতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে সিরাহ ও হাদিসের বইগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যার উল্লেখ রয়েছে। সবচেয়ে অথেনটিক ইবনে ইসহাকের বর্ণনা অনুসারে সংখ্যাটি ছিল ৬০০ থেকে ৭০০। ইবনে ইসহাকই আবার বলেছেন, “কেউ কেউ অতিরঞ্জিত করে বলে যে, ৮০০-৯০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।” মুসনাদ ইমাম আহমাদের একটি হাদিসে ৪০০ জনের কাছাকাছি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ ভালো জানেন।
কতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল? | বনু কুরায়জা উপজাতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

গনিমতের সম্পদ
বনু কুরায়জার দুর্গ থেকে গনিমতের অনেক সম্পদ পাওয়া গিয়েছিল। একটি সূত্র অনুসারে, সেখানে ১৫০০ তলোয়ার ও ১৫০০ বর্ম ছিল। এ ছাড়া সেখানে ২০০০ বর্শা, ৩০০ দেহস্রাণ এবং কয়েক হাজার ছাগল, উট ও ভেড়া পাওয়া গিয়েছিল। সেই সময়ে মুসলিম উম্মাহের কাছে এ ছিল বিরাট সম্পদ। সেখান থেকে পাওয়া প্রচুর পরিমাণে মদ নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল ।
একটি বর্ণনা অনুসারে, এই সময়েই গনিমতের বিধান সম্পূর্ণভাবে চালু করা হয়। অশ্বারোহীরা পদাতিকদের চেয়ে তিনগুণ বেশি সম্পদ পেয়েছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, সেই সময়ে মুসলিম সেনাবাহিনীর লোকদের বেতন দেওয়া হতো না, তাঁরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। একজন অশ্বারোহী সৈনিককে তাঁর ঘোড়ার ভরণপোষণের দায়িত্বও নিতে হতো, তাই ন্যায্যতার স্বার্থেই তাঁদের ভাগ ছিল পদাতিক যোদ্ধাদের চেয়ে বেশি। সুরা আনফালে [৮:৪১] বর্ণিত বিধান অনুসারে পুরো সম্পদের এক-পঞ্চমাংশ দেওয়া হয়েছিল ইসলামি রাষ্ট্র এবং নবিজিকে (সা)।

রায়হানা বিনতে জায়েদ
যুদ্ধবন্দি নারীদের মধ্যে নবিজি (সা) পেয়েছিলেন রায়হানা বিনতে জায়েদ নামের একজনকে। তিনি তাঁকে ইসলাম গ্রহণের জন্য দাওয়াত দেন। কিন্তু রায়হানা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি তখন তাঁকে তাঁর নিজের ভাগ্য (কী করবে, কোথায় থাকবে ইত্যাদি) নির্ধারণের জন্য বেশ কিছুদিন সময় দেন। এরই মধ্যে তিনি নবিজির (সা) ভদ্রতা ও বিনয়ের প্রমাণ পেয়ে যান।
রায়হানা এক সময় বুঝতে পারেন, নবিজি (সা) তাঁকে নিজের কাছে রাখবেন না (অর্থাৎ তিনি তাঁকে অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করবেন)। তখন তিনি অন্য কারও সঙ্গে থাকার চেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নবিজির (সা) সঙ্গে থাকাই শ্রেয়তর বলে মনে করেন। রায়হানা ধর্মান্তরিত হওয়ার পর নবিজি (সা) তাঁকে বলেন, “আমি তোমাকে মুক্তি দিচ্ছি। তারপর আমি তোমাকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। মুক্তিই হবে তোমার বিয়ের দেনমোহর।”

বেশ কিছু সিরাহের বইতে উল্লেখ আছে, রায়হানা নবিজির (সা) স্ত্রী হতে চাননি, তিনি স্বেচ্ছায় ‘মিলক আল-ইয়ামিন’ [২] হিসেবে থাকতে চেয়েছিলেন। তিনি নবিজিকে (সা) বলেন, “তা হবে আমার ও আপনার দুজনের জন্যই ভালো।” আবার অল্প সংখ্যক সিরাহ লেখকদের মতে, তিনি স্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ
