ওয়াহশির পরবর্তী জীবন | ওহুদের যুদ্ধ-৩, ওহুদের যুদ্ধের প্রথম অংশে মুসলিমরা জয়ী হয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরানের সুরা আল ইমরানে (৩:১৫২) এ সম্পর্কে বলেন, যখন মুসলিমরা তাঁর প্রতি আন্তরিক ও মনের দিক থেকে খাঁটি ছিল, তিনি তখন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁদের দিয়েছেন। কিন্তু যখন তাঁরা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং লোভী হয়ে উঠেছে, তখন তাঁদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ওয়াহশির পরবর্তী জীবন | ওহুদের যুদ্ধ-৩ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

শেষ জীবনে এসে ওয়াহশি তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করেছিল। ১১তম হিজরিতে সে মুসায়লিমা আল-কাজ্জাব নামে একজন ভণ্ড নবির আবির্ভাবের কথা শুনতে পায়। ওয়াহশির বর্ণনা অনুসারে, তখন সে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিল, “হে আল্লাহ, আমি হামজার প্রতি যে অন্যায় করেছি তার পরিবর্তে আমাকে মুসায়লিমার প্রাণ সংহার করার অনুমতি দিন।”
ওয়াহশি এ কাজটি করতে যাওয়ার সময় সেই একই অস্ত্র সঙ্গে নেয় যেটি দিয়ে সে হামজাকে হত্যা করেছিল। সে মুসায়লিমার ওপর ঠিক সেভাবেই লক্ষ রাখছিল যেমনটি সে হামজার ক্ষেত্রে করেছিল। তার কথায়, “আমি আমার বর্শাটি তার দিকে নিক্ষেপ করেছিলাম। কিন্তু ঠিক একই সঙ্গে আরেকজন আনসারিও তলোয়ার দিয়ে তাকে অন্য পাশ থেকে আক্রমণ করেছিল। সুতরাং আল্লাহই ভালো জানেন, আমাদের মধ্যে আসলে কে মুসায়লিমাকে হত্যা করেছে।”

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ওয়াহশির মদ্যপান করার অভ্যাস ছিল, তা সে পরবর্তী সময়েও বহাল রেখেছিল। খলিফা উমর (রা) তাকে এ জন্য একাধিকবার শাস্তি দিয়েছিলেন। সেই সময় মদ্যপানের শাস্তি ছিল ৪০টি বেত্রাঘাত। আমরা দেখছি, সাহাবিরা সন্দেহাতীতভাবে সেরা প্রজন্মের মানুষ হলেও অভিমানব নন, স্বাভাবিক মানুষ। তাঁরাও মাদকদ্রব্য সেবন, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপকাজে জড়িয়ে পড়তেন, এ জন্য তাদের শাস্তিও দেওয়া হতো। তবে তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বা মিথ্যাচার করেননি।

আরও পড়ুনঃ
