উম্মাতান ওয়াসাতা | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত-রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন, ওপরে উল্লিখিত অধ্যায়ে সুরা বাকারার সব আয়াতই কেবলা পরিবর্তন সম্পর্কে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বিশেষ একটি আয়াত অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, যা আল্লাহ তায়ালা কেবলা সম্পর্কে এই আয়াতগুলোর মাঝামাঝি অংশে উল্লেখ করেছেন, তা হলো: এভাবে আমি তোমাদেরকে এক উম্মাতান-ওয়াসাতা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী হতে পার।” [২:১৪৩) এই আয়াতে ব্যবহৃত আরবি শব্দ ‘ওয়াসাতা’র অর্থ সাধারণভাবে “মধ্যে” / “মধ্যপন্থি’। এটা এই শব্দের দ্বিতীয় অর্থ। এর প্রাথমিক বা আদি অর্থ হলো “সর্বোচ্চ”। উদাহরণস্বরূপ, একটি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গকে বলা হয় ‘ওয়াসাত’। এখানে লক্ষ করুন, পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটি সাধারণত মাঝখানে থাকে।

উম্মাতান ওয়াসাতা | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

*ওয়াসাত’ বলতে কেবল সর্বোচ্চ অবস্থানই বোঝায় না, আরও কিছু ক্ষেত্রের (যেমন: চরিত্র, সততা, উৎকর্ষ, মহত্ত্ব ইত্যাদি) শ্রেষ্ঠত্বও বোঝায়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরানে এই শব্দটি মূলত এই অর্থে ব্যবহার করেছেন। যেমন সুরা কালামে [৬৮:২৮) আল্লাহ তায়ালা বাগানের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে এই একই শব্দ ব্যবহার করে ‘সবচেয়ে উত্তম’ / সবচেয়ে জ্ঞানী / সবচেয়ে প্রজ্ঞাবান’ ব্যক্তিটিকে বুঝিয়েছেন। সুতরাং সুরা বাকারায় যখন আল্লাহ বলেন ‘উম্মাতান-ওয়াসাতা’, তখন আমাদের এর প্রাথমিক অর্থেই (‘সেরা জাতি) বুঝতে হবে। তবে হ্যাঁ, এর আরেকটি অর্থ রয়েছে, তা হলো ‘মধ্যপন্থি (চরমপন্থি নয় এমন) জাতি’; তবে এটা দ্বিতীয় ধাপের অর্থ ।

এখানে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, মুসলিমরা সকল জাতির মধ্যে সেরা। আর তা প্রমাণ করার জন্য এটিই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়, কারণ আল্লাহ বোঝাতে চেয়েছেন: ‘তোমরা ইহুদি বা খ্রিষ্টানদের কেবলার দিকে মুখ দিও না। বরং আমরা তোমাদেরকে সর্বোত্তম কেবলা দিয়েছি, যা মক্কা। মানবজাতির জন্য এটিই আসল কেবলা।
আরও পড়ুনঃ
