ইসলাম কি ইহুদি-বিদ্বেষী (অ্যান্টি-সেমেটিক)? | বনু কুরায়জা উপজাতি, বনু কুরায়জার পুরুষদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার ঘটনাটিকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে বর্তমান সময়ে কিছু লোক ইসলাম ও নবিজিকে (সা) অ্যান্টি- সেমেটিক বা ইহুদি-বিদ্বেষী হিসেবে অভিযুক্ত করে।
ইসলাম কি ইহুদি-বিদ্বেষী (অ্যান্টি-সেমেটিক)? | বনু কুরায়জা উপজাতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

সন্দেহ নেই, বনু কুরায়জার লোকদের শাস্তি বেশ কঠোর ছিল। কিছু মত অনুসারে, সাদ ইবনে মুআদ বললে নবিজি (সা) আপস করতে রাজি ছিলেন। কিন্তু নবিজির (সা) প্রতি সবচেয়ে বিদ্বেষপরায়ণ ব্যক্তিও তথ্যউপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করতে পারবে না যে, বনু কুরায়জার লোকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কারণ তারা ইহুদি ছিল। বিষয়টি ‘তারা কে ছিল’ নয়, বরং ‘তারা যা করেছিল’। তারা তাদের কৃতকর্মের জন্যই ওই শাস্তি পেয়েছিল ।
শাস্তি যে কঠোর ছিল তা স্বীকার করতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। শান্তি কঠোর হওয়া সব সময় ভুলও নয়। ক্ষমাশীল হওয়া যেমন ভালো, তেমনি সমাজের স্বার্থে কখনও কখনও কঠোর হওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তববাদী বলেই ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। ইসলামে ভদ্রতা ও কোমলতাই মূল নিয়ম। কিন্তু সব সময় আপনি ক্ষমাই করে যাবেন, তা তো হতে পারে না। মাঝেমধ্যে আপনাকে কঠোর পদক্ষেপও নিতে হতে পারে, অন্যথায় অন্যায়কারীরা আপনার ভদ্রতা, কোমলতা ও ক্ষমতাশীলতার জন্য আপনাকে পেয়ে বসবে। আপনাকে কখনও কখনও অপর পক্ষকে চোখে আঙুল দিয়ে তার সীমারেখা দেখিয়ে দিতে হবে।
অনেক মুসলিম পণ্ডিত ও গবেষক ওল্ড টেস্টামেন্ট (ডিওটেরনমি ২০:১০- ১৪) (৩) থেকে নিম্নোক্ত পক্তিগুলো উল্লেখ করে দেখিয়েছেন যে, বনু কুরায়জার সঙ্গে যা করা হয়েছে তা ছিল তাদের নিজেদের জন্যই নিজেদের শরিয়তি বিধানের প্রয়োগ:

১০. তোমরা যখন কোনো শহরকে আক্রমণ করবে, তখন সেখানকার লোকদের কাছে সন্ধির (শান্তির) প্রস্তাব করো। ১১. যদি তারা তোমাদের প্রস্তাব মেনে নেয়, তাহলে শহরের সব লোক তোমাদের দাসে পরিণত হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য থাকবে। ১২. আর যদি তারা তোমাদের সন্ধির (শান্তির) প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে, তাহলে তোমরা অবশ্যই ওই শহরটিকে অবরোধ করে রাখবে।

১৩. যখন প্রভু (তোমাদের ঈশ্বর) শহরটিকে তোমাদের দ্বারা অধিগ্রহণ (হস্তগত) করাবেন, তখন অধিগ্রহণকৃত সমস্ত পুরুষের ওপর তলোয়ার চালাবে (হত্যা করবে)।
১৪. আর তোমরা নিজেদের জন্য নারী, শিশু, গবাদিপশু এবং শহরের যাবতীয় জিনিস নিয়ে নিতে পার। তোমরা এই জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পার। প্রভু (তোমাদের ঈশ্বর) তোমাদের এই জিনিসগুলো দিয়েছেন। সত্য যে, নবিজি (সা) বলেছিলেন, এটা তাদের ওপর আল্লাহর বিচার। কিন্তু শাস্তির সিদ্ধান্তটি তিনি দেননি, তা দিয়েছিলেন তাদেরই মিত্রদের (আউস) নেতা সাদ ইবনে মুআদ।
আরও পড়ুনঃ
