আবু হুদায়ফা (রা) | বদরের যুদ্ধ-৪, আবু হুদায়ফা ইবনে উতবা (রা) ছিলেন উতবা ইবনে রাবিয়ার পুত্র। প্রসঙ্গক্রমে, উত্তরা ছিল কুরাইশদের পক্ষে মুবারাজায় মৃত্যুবরণকারী তিনজনের একজন। [প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ ছিল আবু-হুদায়ফার বোন।]
মুবারাজায় আবু-হুদায়ফা বাবা, চাচা ও ভাইকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান। এমন সময় তিনি শুনতে পেলেন, নবি করিম (সা) বনু হাশিমকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। বাবাকে হারানোর কষ্টে তিনি নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে বলে ফেললেন, “তাহলে কি আমাদের বাবা, চাচা ও ভাইদেরকে মেরে ফেলা হবে, কিন্তু নবিজির (সা) পরিবারের ও বংশের কাউকে মারা যাবে না?” তাঁর এ কথার মাধ্যমে জাহেলি চিন্তাভাবনাই প্রকাশ পেয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর এই কথাটি সবার মুখে মুখে রাষ্ট্র হয়ে গেল। শুধু তা-ই নয়, এমনও শোনা গেল যে, তিনি নাকি নবিজির (সা) চাচা আব্বাসকে হত্যা করার শপথ নিয়েছেন।

আবু হুদায়ফা (রা) | বদরের যুদ্ধ ৪ | মহানবী হযরত-মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
নবিজি (সা) এ কথা শুনে উমরকে (রা) ডেকে বললেন, “হে আবু হাফসা (ও হাফসার পিতা), তবে কি নবির চাচার দেহে তলোয়ারের আঘাত লাগবে?” নবিজি (সা) উমরকে যা বোঝাতে চেয়েছেন তা হলো, এটা যেন না হয়। উত্তরে উমর বললেন, “হে আল্লাহর রসুল, আবু-হুদায়ফা আপনার সঙ্গে মুনাফেকি করেছে। তার ব্যাপারে আমাকে ব্যবস্থা নিতে দিন (অর্থাৎ আমাকে তাঁকে মেরে ফেলার দায়িত্ব নিতে দিন)।”

এ কথা শুনে নবিজি (সা) উমরকে এমন কিছু করতে নিষেধ করেন। উমরও নবিজির (সা) সিদ্ধান্ত মেনে নেন।

পরবর্তীকালে আবু-হুদায়ফা বলতেন, “ওই একটি কথা বলার পরে আমি কখনই স্বস্তি পাইনি, আর কখনও পাবও না, যতক্ষণ না আল্লাহ আমাকে শহিদ হিসেবে গ্রহণ না করেন।” অর্থাৎ, ‘আমি অনেক বড় একটি ভুল করেছি। আমার এ ভুলের জন্য আমি সবসময় অশান্তিতে থাকব, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে শহিদ হওয়ার মর্যাদা দেন।’ পরবর্তী সময়ে তাঁর দোয়া কবুল হয়েছিল এবং তিনি ১২ হিজরি সালে ইয়ামামার যুদ্ধে শহিদ হন।
আরও পড়ুনঃ
