আবু দুজানা (রা) | ওহুদের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আবু দুজানা (রা) | ওহুদের যুদ্ধ-২,  বদরের যুদ্ধের মতো ওহুদের যুদ্ধ সম্পর্কেও সাহাবিদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন ঘটনার বিবরণ রয়েছে। কিন্তু কোন ঘটনার পর কোনটি ঘটেছিল তা নির্ণয় করতে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। ধরুন, আপনি সারাদিন ধরে খুব জটিল একটি কাজে খাটাখাটুনি করে শেষ করলেন। দিনশেষে আপনি আপনার সন্তানদের কাছে যদি সেই কাজের বর্ণনা করেন, তাহলে নিশ্চয়ই প্রতিটি ঘটনার খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করবেন না। উল্লেখ করার মতো একটি বা দুটি বড় ঘটনাই বলবেন। একইভাবে সাহাবিরাও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে গেছেন। তাই যুদ্ধের ঘটনাগুলো সময়ের ক্রমানুসারে সাজানোর ক্ষেত্রে জটিলতা রয়ে গেছে।

 

আবু দুজানা (রা) | ওহুদের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

ওহুদের যুদ্ধের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি আরও প্রকট, কারণ ওহুদে একটি চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আপনি যদি পাঁচটি ভিন্ন সিরাহের বই পড়েন, তবে এই যুদ্ধের ঘটনাগুলোর পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন কালানুক্রমিক বর্ণনা পাবেন। তাই আমরা এই পর্বে এবং পরের দুই-তিনটি পর্বে যুদ্ধের ঘটনাগুলো সাজানোর চেষ্টা করব। সিরাহের অন্যান্য বইতে সেগুলোর বর্ণনায় কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে।

আবু দুজানা (রা) | ওহুদের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

bn.islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১৫ই শাওয়াল সকালে নবিজি (সা) সাহাবিদের যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করার এক বিশেষ উদ্যোগ নিলেন। তিনি নিজের তলোয়ারটি বের করে বললেন, “কে আমার এই তলোয়ারটি নিয়ে যুদ্ধ করবে?” সবাই একযোগে বলে উঠলেন, “হে আল্লাহর রসুল, আমি নেব।” এবার নবিজি (সা) জিজ্ঞেস করলেন, “কে এর ‘হক’ (অধিকার) আদায় করে এটি আমার কাছ থেকে নেবে?” সাহাবিরা কথাটি ভালোভাবে বুঝতে পারলেন না।

তাঁদের মধ্যে থেকে আৰু দুজানা (রা) জিজ্ঞেস করলেন, “হে আল্লাহর রসুল, তলোয়ারের আবার হক কী?” জবাবে নবিজি (সা) বললেন, “যতক্ষণ না তলোয়ারটি ভেঙে যায় বা অকেজো হয়ে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।” আবু দুজানা (রা) সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “হে আল্লাহর রসুল, আমি সেই হত আদায়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েই তলোয়ারটি নিতে চাই।” আবু দুজানা (রা) ছিলেন একজন অকুতোভয় যোদ্ধা।

 

আবু দুজানা (রা) | ওহুদের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

জাহেলি যুগে তিনি ‘ফাইটিং মেশিন’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর লাল রঙের একটি বিশেষ পাগড়ি ছিল যাকে বলা হতো ‘মৃত্যুর পাগড়ি, যা তিনি কেবল যুদ্ধের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পরতেন। তিনি নবিজির (সা) কাছ থেকে তলোয়ারটি নিয়ে সদর্পে হেঁটে বেড়াতে লাগলেন যাতে কুরাইশরা তাঁকে দেখতে পায়। নবিজি (সা) তাঁকে এ রকম করতে দেখে বললেন, “বিশেষ সময় এবং বিশেষ স্থান ছাড়া এ জাতীয় ভঙ্গিতে হাঁটাচলা আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না।” অর্থাৎ জেহাদের সময় শত্রুপক্ষকে ভয় দেখানো এবং সাহাবিদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য আবু-দুজানার (রা) এই কাজটি ঠিক আছে।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment